Posts

Showing posts from 2017

স্বর্গ ভ্রমণ - ভু স্বর্গ

Image
 ভু স্বর্গ দিন গুলো কিভাবে কেটে যায় ।  মনে হচ্ছে এই তো কদিন আগেই ঘুরে আসলাম এই সুন্দর জায়গা গুলো থেকে। আসলে যে সময়ের কাটা দুটো আর ক্যালেন্ডারের পাতা গুলো ৪ বছর পেরিয়ে এসেছে। কিন্তু আজও দিন গুলো রেইনফরেস্টের মতই সজীব হয়ে আছে মনে। খুব সুন্দর একটা ভ্রমণ ছিল। সেই ভয়ংকর সুন্দর রাস্তা গুলোর আঁকা বাঁকা পথ মন আর মস্তিষ্কে যে ছাপ ফেলেছে তা ওই গিরিখাত গুলোর মতই গভীর।  ভয়ংকরকে দূরে ঠেলে শুধু সুন্দরের টানেই বার বার যেতে ইচ্ছা করে। সোলাং ভ্যালিতে হাটু অবধি বরফে গেঁথে স্নো ম্যান বানানো কিংবা দাল লেকে বিকেলে সিখারায় ভ্রমণ। আর আমাদের গাইড + ড্রাইভার ফিরোজের পেন্ড্রাইভের সেই একটাই গান “জাব তাক হায় জান” ,হাহাহাহা। আহ্ লেখাটা লিখতে গিয়ে বুকে ধিপধিপানি ব্যথা উঠে গেল, কি জানি বলে – Sweet pain! দিল্লি থেকে ভলভোতে কুল্লু হয়ে মানালি ভাড়া ৮০০ রূপি (২০১২-১৩ সালে)। কলকাতা থেকে ট্রেনেও যাওয়া যায়,তবে আমরা দিল্লী ঘুরে তারপর মানালি গিয়েছি। বাস থেকে নেমেই কিছু ভাল হোটেল আছে। আমরা ” Hotel Yak” এ ছিলাম। লোকেশন ভাল। আশেপাশে রেস্টুরেন্ট আর কাপড়-চোপড়ের দোকান আছে। কেনাকাটা করতে চাইলে একটু দরদাম করে নিত

দার্জিলিং ভ্রমন , হোটেল ও খরচ

Image
দার্জিলিং ভ্রমন , হোটেল ও খরচ নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা। কল্পনা নয় সত্যি। এখানে মেঘ দেখা যায়, ছোঁয়া যায়। এজন্য প্রয়োজন হয় না পাখির মতো ডানা থাকা কিংবা উড়োজাহাজে চড়ে ঘুরে বেড়ানোর। শুধু প্রয়োজন কর্ম ব্যস্ততার মধ্যে একটু সময় বের করে স্বদিচ্ছার বহিঃপ্রকাশ ঘটানো। তবেই হারিয়ে যাওয়া যাবে বাস্তবের মেঘের দেশে। খুব কাছ থেকে অনুভব করা যাবে মেঘের উষ্ণতা। দেখা যাবে মেঘের লুকোচুরি খেলা। এই খেলায় মেতে ছিলাম আমরা কয়েকজন। ইচ্ছে হলে দূর্গা পুজোর এই লন্বা ছুটিতে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন শিলিগুড়ি ও শৈলশহর দার্জিলিং। যাত্রা শুরু হলো শিলিগুড়ির উদ্দেশ্যে। সন্ধ্যে ৬ টায় আমরা পৌঁছে গেলাম এয়ার ভিউ মোড়ে। পরের দিন সকালে নাস্তার টেবিলে মিনি মিটিংয়ের সারসংক্ষেপ হচ্ছে দার্জিলিং যাওয়া। এয়ার ভিউ থেকে অটোতে চড়ে সোজা মালাগুড়ি মোড়। এখানেই হোটেলের সামনে থেকে খুব সহজেই দার্জিলিং যাওয়ার গাড়ি পাওয়া যায়। সিঙ্গেল ২০০-২৫০ টাকা, রিজার্ভ ৭০০-৮০০ টাকা । আমরা এবার দার্জিলিংয়ের পথে।  উঁচু পাহাড়ের কোল ঘেষে সরু রাস্তা বেয়ে আমরা যেন শুধু উপরেই উঠছি। কি পরিমান উপরে আছি তা নিচে তাকালে বোঝা মুশকিল। এমনকি ভয়ে আৎকে উঠতে পারেন। তাই দা

ছোটবেলার রসগোল্লা

Image
স্কুলে থাকতে সৈয়দ মুজতবা আলীর একটি লেখা পড়েছিলাম। নাম রসগোল্লা।  গল্পের বিষয়বস্তু ইউরোপীয় এক এয়ারপোর্টের কাস্ট পুলিশের রসগোল্লা চিনতে না পারা এবং গল্পের নায়ক ঝান্ডুদার প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব ও ব্যপক রসবোধ। ঝান্ডুদা সারাজীবনের জন্য আমার মগজে গেঁথে গিয়েছিলেন, বিশেষ করে তাঁর চামড়ার ব্যাগটার কারণে। সেটায় নানান দেশের, নানান এয়ারপোর্টের আগমন ও বহির্গমনের টিকেট সাঁটা যা প্রমাণ করে ঝান্ডুদা কত অহরহ বিদেশ ভ্রমন করেন।  সৈয়দ মুজতবা আলী ঝান্ডুদাকে বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন যে, তাঁকে দেখে বোঝার উপায় নেই তিনি দেশে ফিরছেন না দেশের বাইরে যাচ্ছেন। তখন থেকে বড় হয়ে ঝান্ডুদার মত দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়াবো এরকম স্বপ্ন দেখেছি শুধু। মাঝে মাঝে সৈয়দ মুজতবা আলীকেই মনে হত ঝান্ডুদা। ইচ্ছে হত তাঁর মত পনেরটা ভাষা জানবো। মনে মনে নজরুলের কবিতা আওড়াই, “থাকবোনাকো বদ্ধ ঘরে, দেখবো এবার জগৎটাকে, কেমন করে ঘুরছে মানুষ, যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে।” অবশেষে আমার প্রথম বাংলাদেশের সীমানা পার হবার সুযোগ ঘটে ১৯৮৪ সালে। তখন আমার বয়স মাত্র দশ। সেই গল্প আরেকদিন বলবো। আজকের গল্পের সময় কাল ২০১০ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্

শ্নোনেংপেডেং – স্বচ্ছ জলের সাথে মিতালী

Image
মেঘালয়ের ডাউকির ছোট্ট গ্রাম শ্নোনেংপেডেং (অনেকে সোনাংপেডেং লিখে থাকে)। অখ্যাত এই গ্রামটিই হয়ে উঠেছে পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। কি আছে ছোট্ট এই গ্রামে? যার জন্য দূর-দুরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসছে এই গ্রামে। প্রথম ছবিটা দেখি পানির নীচের, দেখেই মুগ্ধ! এত সুন্দর। বাকি ছবিগুলোর সাথে জাফলংয়ের অনেক মিল আছে। ডাউকি হয়ে ভিসা করেছিলাম, শিলং যাবার জন্য। গত জুলাইতে ঘুরে আসি শিলং, ভিসার মেয়াদ এখনও কয়েকমাস বাকি। এদিকে নাফিজ ভাই ঘোষণা দিয়ে দিলেন মাত্র ৩,৫০০ টাকায় ঘুরে আসা সম্ভব। ভিসা যেহেতু করা ছিল, আগের ট্রিপের ২,০০০ রুপিও বাসায় ছিল, সিদ্ধান্ত নিলাম যাওয়াই যাক। । নতুন একটা স্নোরকেলিং সেট আনিয়েছি আমেরিকা থেকে, একবার মাত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। সেটারও একটু সদ্ধ্যহার হয়ে যাবে। রওনা দেবার মাত্র দুই দিন আগে ভয়াবহ দু:সংবাদ। এক আকস্মিক ঘোষণায় ৫০০ ও ১,০০০ রুপির নোট বাতিল ঘোষণা করেছে ভারত। কঠিন তারল্য সংকটে ভুগছে ভারত, ওখানে থাকা বাংলাদেশি পর্যটকরা আছেন বিপদে। এই অবস্থায় অবস্থায় এই ভ্রমণ বাতিল করার মতই অবস্থা। এত মন খারাপ হলো সবার। জরুরী বৈঠক ডাকা হলো, দলের জৈষ্ঠ্য সদস্যরা বসে ঠিক করবে এই অবস্থায়

সোনাংপেডেং, মেঘালয়

Image
মেঘালয় রাজ্যের ডাউকির অসম্ভব সুন্দর একটি গ্রাম সোনাংপেডেং (অনেকে শ্নোনেংপেডেং লিখে থাকে) যা জৈন্তা হিলস জেলার অন্তর্গত। সোনাংপেডেং গ্রামটি শিলং থেকে ৯৫ কিলোমিটার এবং ডাউকি বর্ডার থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। পাশেই পাথুরে নদী উমংগট, যার পানির রং ঘন সবুজ আর স্বচ্ছ। দিনের বেলা পাথুরে নদীতে মাছ ধরে, স্নোরকেলিং/রাফটিং/কায়াকিং/বোটিং আর স্বচ্ছ পানিতে গোছল করে দিনটি খুব ভাল ভাবেই পার করে দিতে পারবেন। রাতে এখানেই করতে পারেন ফায়ারক্যাম্প আর বারবিকিউ। ২য় দিন আসে পাশের বেশ কিছু ঝর্নাও চাইলে দেখতে পারেন। করতে পারবেন ট্রেকিং, জিপলাইনিং আরও অনেক কিছুই। বোটে করে জলপ্রপাতের কাছাকাছি যাওয়া যাবে। বোটিংয়ের জন্য নির্ধারিত সময় সকাল দশটা থেকে বিকেল চারটা। অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট পরতে হবে। কায়াকিং এর জন্যে কায়াক ভাড়া পাওয়া যায়। সম্ভাব্য খরচঃ আপনি যদি বাজেট ট্রাভেলার হন এবং আপনার গ্রুপ যদি ৬ জনের হয় সেক্ষেত্রে একজনের সম্ভাব্য খরচ – ঢাকা টু সিলেট – ২৮৫ টাকা ( ট্রেন) সকালের নাস্তা – ৪০ টাকা সিলেট টু তামাবিল – ১০০ টাকা তামাবিল টু সোনাংপেডেং – ১৫০ টাকা দুপুরের খাবার -১৫০ টাকা কটেজ – ৩৫০

জার্মানিতে ৪০ বছর: পুরনো বন্ধুদের নতুন করে চেনা

Image
জার্মানিতে আসার পর ফ্রাঙ্কফুর্টে প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা যে এত সুন্দর হবে, সেটা আগে কল্পনাই করতে পারিনি। অবশ্য এসব কিছুর কৃতিত্ব ছিল নুরু ভাইয়ের । সকালে উঠে নুরু ভাই নিজেই আমাদের নাস্তা আর চা খাওয়ালেন। ওই সময়ের জন্য তিনি হয়ে গেলেন আমাদের অভিভাবক। নাস্তা শেষ করার পর নুরু ভাই জানালেন, আমাদেরই আরেক স্কুলের বন্ধু ফরহাদের কাছে নিয়ে যেতে চান। ফরহাদ হচ্ছে রশিদ, নিলু ও আমার বাল্যবন্ধু। ক্লাস থ্রি থেকে হাই স্কুল পর্যন্ত আমরা একসাথে পড়েছি। ফরহাদ ছোটবেলায় আমার খুবই ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। কিন্তু কলেজ জীবনে ফরহাদ ছাত্রলীগের দিকে ঝুঁকে পড়ায়, আর রশিদ ও আমি ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী হয়ে ওঠায় আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বের দূরত্ব বেড়েছিল। তাই ওর বাসার দিকে যাওয়ার সময় সংকোচ হচ্ছিল। কিছু না জানিয়ে ওর ওখানে গেলে কেমন প্রতিক্রিয়া হবে সেটা ভাবছিলাম? আমরা তখন জার্মানিতে একেবারেই ভাসমান। তাই যেখানেই আশার আলোর সম্ভাবনা থাকবে সেখানেই আমাদের যেতে হবে। মজার বিষয় হলো, নুরু আর ফরহাদ আমাদের প্রায় ছয় মাস আগে ফ্রাঙ্কফুর্টে গেছে। যদিও তারা দু’জনই ছাত্রলীগের জগন্নাথ কলেজ শাখার নেতৃস্থানীয় ছিল এবং সব সময় একসাথেই চলাফেরা করতো, তব

জার্মানিতে ৪০ বছর: রাজনৈতিক আশ্রয় নাকি ছাত্র ভিসা?

Image
আমার ছোটবেলার বন্ধু ফরহাদের একটা গুণ লক্ষ্য করে এসেছি। সে সবসময় বন্ধুবান্ধব প্রিয় মানুষ, আর দল বাধার একটা ঝোঁক  আছে ওর মধ্যে। এই ফ্রাঙ্কফুর্টে এসেও দেখলাম, ছয়মাসের মধ্যে ওর একটা ছোটখাটো দল হয়ে গেছে। তার পরিচিতরা প্রায়ই ওর ওখানে আসা-যাওয়া করত। এ কারণে আমাদের সুবিধা হল যে আমরা কারও কারও কাছ থেকে জার্মানিতে থাকার পদ্ধতি, কাজের পরিবেশ- এসবের ধারণা ঘরে বসেই পেতে শুরু করলাম। মোটা দাগে সে সময় জার্মানিতে থাকার দু’টো পথ ছিল। একটি হচ্ছে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করা, আর আরেকরটি হচ্ছে ছাত্র হিসেবে থাকার আবেদন করা। প্রথম পথটি ছিল আপেক্ষিকভাবে সহজ আর দ্বিতীয়টি ছিল ঘোরানো। সুবিধা-অসুবিধা স্বাভাবিকভাবে দুটো পথেই ছিল। যেমন- রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করলে কাজ পাওয়ার আগ পর্যন্ত সরকারের কাছ থেকে ঘর ভাড়া আর খাবার টাকা পাওয়া যায়। অন্যদিকে ছাত্র হলে সব খরচ নিজেকেই চালাতে হতো এবং একজন ছাত্র শুধু ছুটির সময় কাজের পারমিশন পেত। জানতে পারলাম, আশ্রয় প্রার্থনা করে যারা আবেদন করবেন, তারা দেশের বাইরে তো নাই-ই, এমন কি অনুমতি ছাড়া জার্মানির অন্য শহরেও যেতে পারবেন না। নৈতিকতার কারণে নয়, তখন আমার কাছে বড় হয়ে দ